আরও নিরাপদ কলকাতা বিমানবন্দর, পাখি তাড়াতে চালু হচ্ছে অত্যাধুনিক এই ব্যবস্থাপনা, বাংলার মুখ

কলকাতা (দমদম) বিমানবন্দরকে আরও সুরক্ষিত ও নিরাপদ করতে উদ্যোগী হল কর্তৃপক্ষ। এবার এই বিমানবন্দরে অত্যাধুনিক সনিক এবং আল্ট্রা সনিক সাউন্ড ওয়েভ ব্যবস্থাপনা ব্যবহার করা হবে।
যার উদ্দেশ্য হল, প্রযুক্তির মাধ্যমে পক্ষীকুলকে দূরে রাখা। যাতে বিমানের সঙ্গে উড়ন্ত পাখির সংঘর্ষে কোনও অনভিপ্রেত বা মর্মান্তিক ঘটনা না ঘটে।
সূত্রের দাবি, ইদানীংকালে – বিশেষ করে গত কয়েক বছরের মধ্যে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে বিমান যাতায়াত করার সময় বা ওঠা-নামার সময় বহুবার পাখির সঙ্গে বিমানের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
এই ধরনের সংঘাতের ফল যে কত ভয়ঙ্কর হতে পারে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। সেই কারণেই এবার প্রযুক্তি সাহায্য নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ।
টাইমস অফ ইন্ডিয়া-এ প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, গত বছরের প্রথম ১০ মাসে কলকাতা বিমানবন্দরের তরফে ১৯টি বিমান-পাখি সংঘর্ষের খবর নিশ্চিতভাবে রিপোর্ট করা হয়। এছাড়াও, ৬০টি এমন সম্ভাব্য ঘটনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
২০২৩ সালে এই সংখ্য়াগুলিই ছিল যথাক্রমে – ১৮ ও ৯১। ২০২২ ও ২০২১ সালের মধ্য়ে এমন সংঘাতের ঘটনা ঘটেছিল ৬০-এর বেশি। যদিও করোনা অতিমারির আগে পর্যন্ত বছরে সব মিলিয়ে এমন ৪০ থেকে ৫০টি ঘটনা ঘটত।
এই পরিসংখ্যান উড়ান সংস্থাগুলির চিন্তা বাড়িয়েছে। কারণ, পাখির সঙ্গে ধাক্কা লেগে বিমান ভেঙে পর্যন্ত পড়তে পারে। আর তাতে অসংখ্য মানুষের প্রাণহানি ঘটবে। তাছাড়া, এই ধরনের ছোট থেকে বড় – প্রায় সব ধরনের সংঘাতেই প্রচুর পরিমাণে আর্থিক ক্ষতি হয়। সেটাও উড়ান সংস্থাগুলির মাথাব্যথার বড় কারণ।
অতীতে এই ধরনের সমস্যা মোকাবিলা করার জন্য বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে পাখি ধরতে এবং তাড়াতে পারে, এমন কর্মীদের নিয়োগ করা হয়েছিল। এছাড়া, পাখি তাড়াতে বাজি, পটকাও ফাটানো হত।
কিন্তু, ইতিমধ্য়ে বাজি, পটকা ফাটানোয় নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। অন্যদিকে, আশপাশের বাজার এলাকাগুলিতে প্রচুর আবর্জনার স্তূপ জমে। সেইসব আবর্জনা থেকে খাবার সংগ্রহের লোভে পাখির সংখ্য়া লাগাতার বাড়ছে।
এই প্রেক্ষাপটে পাখি তাড়াতে সনিক এবং আল্ট্রা সনিক সাউন্ড ওয়েভ ব্যবস্থাপনা কাজে লাগাতে চাইছে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ । সূত্রের দাবি, এই ধরনের অদৃশ্য ওয়েভ পাখিদের ভয় পাইয়ে দেয়, বিভ্রান্ত করে। ফলে তারা এলাকা ছেড়ে পালায়।
অন্যদিকে, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের তরফে স্থানীয় পুরসভাগুলির সঙ্গেও যোগাযোগ করা হয়েছে। যাতে তারা বিমানবন্দরের আশপাশের এলাকার আবর্জনা দ্রুত ও নিয়মিত পরিষ্কার করে, সেই বিষয়ে আবেদন জানানো হয়েছে।
যদিও এই আবেদনে দমদম পুরসভা, উত্তর দমদম পুরসভা, নিউ ব্যারাকপুর পুরসভা এবং বিধাননগর পুরনিগম সেভাবে সাড়া দেয়নি বলেই দাবি সূত্রের। বিমানবন্দরের অনুরোধ রক্ষা করেছে কেবলমাত্র মধ্যমগ্রাম পুরসভা কর্তৃপক্ষ।