Medical College: ‘ওঁদেরই একজনকে আমার মেয়ে শেষ মেসেজ করেছিল, তিন জনকে গার্ড করা হল কেন?’, এতদিনে ‘কুন্তল’-সহ তিন জনের কথা বললেন ছাত্রীর বাবা-মা – Bengali News | Medical college A female student of MJN Medical College has complained of suicide

এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ছাত্রী আত্মঘাতীImage Credit source: TV9 Bangla
কোচবিহার: এবার থ্রেট কালচারের অভিযোগ এল কোচবিহারের এমজেএন মেডিক্যাল কলেজেও। যার জেরে হস্টেলেই নিজের ঘরে গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মঘাতী হয়েছিলেন এক ডাক্তারি ছাত্রী। ২০২৩ সালের ঘটনা হলেও আরজি কর কাণ্ডের আবহে যখন থ্রেট কালচারের অভিযোগ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে, তখন প্রকাশ্যে এসেছে এই ঘটনা। জানা যাচ্ছে, ২০২৩ সালের জুন মাসে ওই ছাত্রী আত্মঘাতী হন। র্যাগিংয়ের অভিযোগ তুলেছিল পরিবার।
জানা যাচ্ছে, পূর্ব বর্ধমানের ইছলাবাদ থেকে কোচবিহারের এমজেএন মেডিক্যাল কলেজে পড়তে গিয়েছিলেন ওই ছাত্রী। পরিবারের অভিযোগ, হস্টেলে ‘ইনট্রো’ দেওয়ার নামে চলত র্যাগিং। ময়নাতদন্তের পর দেহ দাহ করার সময়েও সিনিয়ররা ঘিরে রেখেছিল বলে দাবি পরিবারের। পুলিশের ভূমিকা নিয়েও প্রশ্ন তোলে পরিবার। ঘটনার দিনই এক সিনিয়র ছাত্রের সঙ্গে ওই ছাত্রীর ঝামেলা হয়েছিল বলে পরিবার জানতে পারেন। ওই সিনিয়র ছাত্র আবার থ্রেট কালচারের ‘চক্রী’ বিরূপাক্ষ বিশ্বাস ঘনিষ্ঠ বলেই কলেজ সূত্রে জানা গিয়েছে।
মৃত ছাত্রীর বাবা TV9 বাংলাকে বলেন, “কলেজে পড়াশোনার পরিবেশটা একদমই খারাপ। ও অনেকবার বলেছে, কলেজটা ভালো না, হস্টেলে পড়াশোনা হয় না। ইনট্রো, এটাই ভালো না। কলেজ কর্তৃপক্ষের অনেক গাফিলতি রয়েছে। মেডিক্যাল কলেজের পড়ুয়া আবার টুকলি করে পাশ করবে কি? ওঁরা তিনটি মেয়েকে গার্ড করে রাখল, কেন? ওদের একজনকে আমার মেয়ে শেষ মেসেজ করেছিল, বলেছিল, সরি ফর মাই বিহেভিওর… ”
এই খবরটিও পড়ুন
আরও বিস্ফোরক অভিযোগ, যেদিন হস্টেলের ঘর থেকে ছাত্রীর দেহ উদ্ধার হয়, ঠিক তার আগের দিনই কলেজের টিএমসিপি চিকিৎসক ছাত্রনেতার সঙ্গে তাঁর মেসেজে কথোপকথন হয়। কিন্তু অভিযোগ, ঘটনার পর কলেজেরই আরেক ছাত্রনেতা, যিনি মূলত থ্রেট কালচারে অভিযুক্ত, সেই চ্যাট ডিলিট করে দেন।
মৃত ছাত্রীর মায়ের বক্তব্য, “আমরা একটা জিনিস চাইছে, ওই তিনটে মেয়ে আর কুন্তল বলে ছেলেটা… ওদের যেন শাস্তি হয়।”
কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ নির্মলকুমার মণ্ডল বলেন, “আমরা সবসময়ই ফার্স্ট ইয়ারের ছেলেমেয়েদের আলাদা করে রাখার ব্যবস্থা করতাম। সেটাকেই বিরোধিতা করে অন্য অজুহাত দেখিয়ে আমাকে ঘেরাও করা হয়। ফার্স্ট ইয়ারের ছেলেমেয়েদেরও এই ঘেরাও অভিযানে অংশ নিতে বাধ্য করা হয়। ওই মেয়েটিকেও বাধ্য করা হয়েছিল। আমি সেটা ওর বাবাকেও জানিয়েছিলাম। কিন্তু তাতে যে মেয়েটা কষ্ট পেয়েছিল, সেটাও পরে আমাদের এসে জানিয়েছিল। ইনট্রো নামে যে বিষয়টা, সেটাও শুনেছি। আমি ওর বাবাকে বলেছিলাম, আমাকে তো তখনই জানাতে পারতেন। কিন্তু ওর বাবা তখন বলেছিলেন, আমার মেয়েই বারণ করেছিল।” অর্থাৎ ভয়ে সে সময়ে কাউকেই কিছু জানাতে পারেননি ছাত্রী।
চিকিৎসক সংগঠনের নেতা উৎপল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “এই থ্রেট কালচার বিভিন্ন সময়ে ছাত্রছাত্রীরা হয়েছে, শিক্ষকরাও হয়েছেন। এটাও একটা ভয়ঙ্কর ঘটনা। তিলোত্তমার ঘটনার থেকে কোনও অংশে কম নয়। কারণ ওখানেও ময়নাতদন্তের সময়ে দেহ ঘিরে রেখেছিল। একই পরিস্থিতি।”