Burdwan University: উপাচার্যের বিরুদ্ধে লাগাতার বিক্ষোভ, ‘থমকে’ বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় – Bengali News | Chaos in Burdwan University due to agitation

বর্ধমান: বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটে তালা। উপাচার্যের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ। কয়েকদিন আগে কার্যত পিছনের দরজা দিয়ে বেরতে হয় উপাচার্যকে। ২ বার এক্সকিউটিভ কাউন্সিলের সভা করা যায়নি। অনেক সিদ্ধান্তই ঝুলে। কার্যত অচলাবস্থা বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে। এই নিয়ে স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে উষ্মা প্রকাশ করেন উপাচার্য গৌতম চন্দ্র। তাঁর বক্তব্য ঘিরে জল্পনা ছড়িয়েছে শিক্ষানুরাগী মহলে। এই পরিস্থিতিতে ভাইরাল হয়েছে একটি ভিডিয়ো। যা নিয়ে শিক্ষামহলে আলোচনা শুরু হয়েছে।
ভাইরাল ওই ভিডিয়োতে দেখা যাচ্ছে, ইউনিভার্সিটির মূল দরজা বন্ধ। সেই দরজার ফাঁক দিয়ে ভিতরে আসছেন কেউ কেউ। বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকদের অনেকেই কোনওরকমে সেখান দিয়ে আসছেন। কে বা কারা মূল দরজায় তালা ঝুলিয়েছে, তার দায় কেউ স্বীকার করেনি।
শুক্রবার বিশ্ববিদ্যালয় খোলা ছিল। সেদিন এই দৃশ্য দেখা যায়। সোমবার বিশ্ববিদ্যালয় খুললে কী হবে, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে সেই ইঙ্গিত অবশ্য দিয়েছেন উপাচার্য। তাঁর বক্তব্যের একটি ভিডিয়ো ছড়িয়ে পড়েছে। লাগাতার বিক্ষোভের মুখে পড়া উপাচার্য সেখানে বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ভদ্রভাবে অফিসে আসবেন, আবার ভদ্রভাবে অফিস থেকে বাড়ি যাবেন। এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু তাঁর অফিসের গেটে তালা লাগানোর অধিকার কারও নেই। সংবিধানেও বলা নেই। কিন্তু ১৩ অগস্ট চার পাঁচ জন ছাত্রের সঙ্গে প্রায় ৫০ জন বহিরাগত বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের অফিসে ঢুকে তাণ্ডব চালিয়েছে। অজস্র, অকথ্য কথাবার্তা লিখে গিয়েছে।”
এই খবরটিও পড়ুন
বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. গৌতম চন্দ্র সেদিন বলেন, “দায়িত্ব ছিল না কারও? বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৫০ জন গার্ড আছেন। প্রত্যেক মাসে আমি সই করি, মাইনে হয় তাঁদের। আমাকে সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব কি তাঁদের ছিল না? রেজিস্ট্রার কেন ফোন করে পুলিশ ডাকলেন না? উপাচার্যকে সুরক্ষা দেওয়ার দায়িত্ব কি নেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কারও? আমাকে কেন পিছন দিক দিয়ে পালিয়ে যেতে হল?”
উপাচার্য আরও বলেন, “১৩ তারিখ পর্যন্ত আমি কাজ করেছি। ১৪ তারিখ আমি অফিস যাইনি। আর যাবও না। যতদিন না ভদ্রভাবে উপাচার্যের অফিসে ঢুকতে পারব, ভদ্রভাবে বেরিয়ে বাড়ি যেতে পারব, ততদিন উপাচার্যের অফিসে ঢুকব না। নীলবাতি লাগানো গাড়িতে আর চাপছি না। এই যে ভাঙা বাংলোতে আমি থাকি, সেখানে আমি ভাড়া দিয়ে থাকি। ভাইস চ্যান্সেলরের যে ভাতা সেটা আমি নিই না, প্রফেসরের মাইনে নিই। কাজেই কোনও ফাইলে আমি আর সই করব না। যতদিন না আমি ভদ্রভাবে অফিসে যেতে পারব এবং অফিস থেকে বাড়ি ফিরতে পারব।”
সব মিলিয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে অরাজক অবস্থার পদধ্বনি। এমনিতেই গত দশ বছরে বারবার ফলপ্রকাশ সহ নানা ইস্যুতে ছাত্র বিক্ষোভে উত্তাল হয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয়। উঠেছে স্বজনপোষণ, তছরুপ-সহ নানা অভিযোগ। এর মধ্যে অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব নেন ড. গৌতম চন্দ্র। কিন্তু তিনি চেয়ারে বসার কিছুদিন পর থেকেই তাঁর বিরুদ্ধে বারবার সরব হয়েছে শাসকদলের কর্মী, অধ্যাপক এবং ছাত্র সংগঠন। মূলত তাদের বিক্ষোভের জেরে স্থগিত রাখা হয়েছে এক্সিকিউটিভ কাউন্সিলের সভা। অন্যদিকে একটি মহলের মত, অস্থায়ী উপাচার্য কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারেন না। এইসব নিয়ে চরম জটিল সমস্যাটা। তার মধ্যে গত কয়েকদিনের ঘটনাপ্রবাহ সেই সমস্যাকে জটিলতর করে তুলেছে বলে মনে করছে শিক্ষামহল।