Biriyani Chemical Effects: বাঙালির বিরিয়ানি প্রেমে রয়েছে এই খলনায়ক―চিনে নিন এখনই – Bengali News | Excessive love for biriyani can cause problem, know how
সত্যিই তো, বর্ণে, গন্ধে, বাঙালির মনে বিরিয়ানি যে দোলা দেয়, সেটা কী আর বলে বোঝানোর কোনও প্রয়োজন আছে? সেই নবাব ওয়াজিদ আলির আমল হাত ধরে লক্ষ্মৌ থেকে কালকাতায় বিরিয়ানির এন্ট্রি। আর এখন মুঘল দরবার পাড় করে কলকাতার বাঁকে বাঁকে বিরিয়ানির ঘাঁটি। পাঁচ তারা হোটেল হোক বা রাস্তার ধারের ছোট দোকান।বিরিয়ানিরে গন্ধ নাকে এলেই বাঙালির মনটা কেমন কেমন করে ওঠে। আর শুধু বাঙালিই বা কেন? গোটা দেশটাই বিরিয়ানি প্রেম মত্ত। একটা ছোট্ট পরিসংখ্যান শুনবেন, ভারতের প্রতি সেকেন্ডে প্রায় তিনটি বিরিয়ানি অর্ডার করা হয় অন লাইনে। যার একটা বংড় অংশ এই শহর থেকে। আর এই পরিসংখ্যান শুধু অনলাইন ফুড ডেলিভারি সংস্থার হিসেবে। যারা হোটেল রেস্তোঁরায় গিয়ে খাওয়া দাওয়া করছেন, তাদের হিসেব কিন্তু এখানে নেই। বুঝতেই পারছেন নিশ্চই বাংলা ও ভারতের সঙ্গে বিরিয়ানি প্রেমের সম্পর্ক কতটা গভীর। কিন্তু সব প্রেমেই নাকি এক আধটা ভিলেন থাকে। বাঙালি ও বিরিয়ানির প্রেমের কাহিনীতেও ভিলেন উপস্থিত। যা ক্রমাগত এই সম্পর্কটাকে বিষিয়ে তুলছে। আজকের স্পেশাল নাইনে কথা হবে এই বিরিয়ানির ভিলেন সম্পর্কে। আজকের টিভি নাইন স্পেশাল বিরিয়ানিতে বিষ।
বিরিয়ানি প্রেমে মত্ত কলকাতার জনপ্রিয় আরজে সোমক, বিরিয়ানি দিবসে নিজের সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাকাউন্টে এভাবেই নিজের বিরিয়ানি প্রেমের কথা জানিয়েছিলেন। আরজে সোমক প্রকাশ করেছেন। কিন্তু এমন অনেক মানুষ আছেন যাঁরা হয়তো কথায় প্রকাশ করতে পারেন না। কিন্তু ওই গন্ধটা নাকে এলেই মনটা হু হু করে ওঠে। হবে নাইবা কেন বলুন, সম্পর্কটা তো আর আজকের নয়। প্রায় তিনশো বছর হতে চলল। মেটিয়াবুরুজের এই বাড়িটাই বাঙালির সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল বিরিয়ানির। দেশের অন্য প্রান্তের বিরিয়ানির মত নয়, রান্নার পদ্ধতি ও উপকরণে কিছু বদল করে ওয়াজিদ আলি শাহ ও তাঁর রাঁধুনীর দল তৈরি করে অক অন্য রকম বিরিয়ানি। যা বর্তমানের কলকাত্তাইয়া বিরিয়ানি। মেটিয়াবুরুজের ওয়াজিদ আলির প্যালেস থেকে বিরিয়ানির গন্ধ ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পরল গোটা বাংলা জুড়ে। অনেকেই মজা করে বলেন বাঙালির জাতীয় খাবার নাকি বিরিয়ানি। ১৮৫৬ সালে যে যাত্রা শুরু হয়েছিল, তা এখনও চলছে সমান তালে। সম্পর্কের গভীরতা আরও বেড়েছে। ছোট হোক বা বড়, কোনও বিরিয়ানির দোকানকে কখনও ফাঁকা থাকতে দেখেছেন? একসময় যা ছিল শাহি এখন সেটাই আম বাঙালির প্রিয় খাদ্য।
শুরুতেই বলেছিলাম, সব প্রেম কাহিনীতেই একটা ভিলেন থাকে। বাঙালি ও বিরিয়ানির প্রেম কাহিনীতেও এক ভিলেন উকিঁ দিচ্ছে। সম্প্রতি কলকাতা পুরসভার এক রিপোর্ট বলছে, এক শ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ীর হাত ধরে বাঙালি ও বিরিয়ানির প্রেমের কাহিনীতে ভিলেনের এন্ট্রি হয়েছে।মেটানিল ইয়েলো। যাকে অ্যাসিড ইয়েলোও বলা হয়। পুরসভার দাবি, শহরের একাধিক নামি দামি দোকান থেকে ছোট দোকান, মাত্রাতিরিক্ত ভাবে ব্যবহার করা হচ্ছে এই বিষাক্ত রঞ্জক। যা শরীরে ঢুকলে হতে পারে ক্যানসারও। দেখা দিতে পারে, কিডনি, পাকস্থলি এমনকি স্নায়ুর রোগও। কলকাতার এসপ্ল্যানেড, বালিগঞ্জ, পার্কসার্কাস, পার্কস্ট্রিট এলাকার বেশ কিছু রেস্তোরাঁয় হানা দিয়ে চোখ কপালে উঠেছে পুরসভার ফুড ইনস্পেক্টরদের। ক্রেতার চোখ টানতে উজ্জ্বল হলুদ রঙে বিরিয়ানিকে রাঙাতে ব্যবহার করা হচ্ছে মেটানিল ইয়েলো। যে বিষাক্ত রাসায়নিক খাবারে ব্যবহার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। ভেজাল মিলেছে চিকেন ভর্তা, তন্দুর চিকেন সহ অন্যান্য খাবারেও।
যে বিষ মিশছে তাতে এক দিনে কিছু হবে না। কিন্তু একদিন অনেক কিছু হতে পারে। এই বিষগুলো স্লো পয়েজেন করছে আমাদের শরীরে। বিরিয়ানি যেমন ধিমে আঁচে রান্না হয়, ঠিক তেমনই কিছু অসাধু ব্যবসায়ী ধীরে ধীরে আমাদের শরীরে বিষ ঢুকিয়ে দিচ্ছে মুনাফা অর্জন করতে। যার হাতিয়ার হচ্ছে বিরিয়ানি ও একাধিক খাবার। বিরিয়ানি হোক বা অন্য যে কোনও রান্না। রং ও ফ্লেভার ব্যবহারের নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে। কোন রং ব্যবহার করা হবে আর কোন ফ্লেভার ব্যবহার করা যাবে তা নিয়ে নির্দিষ্ট নিয়ম ও নীতি আছে। কিন্তু সেই নিয়ম নীতির তোয়াক্কা অনেকেই করছেন না। জনতা জানতেও পারছে না স্বাদে আহ্লাদে শরীরে কতটা বিষ ঢুকছে।