Motorcycle Ride: মোটরসাইকেল ডায়েরিজ: পর্ব ৪৮–ভারতের প্রথম গ্রাম দিয়ে পাণ্ডবরা গিয়েছিল স্বর্গে – Bengali News | How To Visit India’s First Village Mana Village near Badrinath in Uttarakhand

0

মানা গ্রামটি বদ্রীনাথ থেকে একটু দূরে থাকায় এখানে পর্যটক এবং মানুষের ভিড় কম। বেশিরভাগ লোকই বদ্রীনাথ ধামে রাত্রি নিবাস করে থাকেন। এখানে সকালের প্রকৃতির নিস্তব্ধতা আর পাখির ডাকে যখন ঘুম ভেঙে জানলার পাশে আসবেন, তখন দেখতে পাবেন প্রকৃতির অপরূপ সুন্দর রূপ। তার কারণ এই গ্রামটি বেশ উচুতে অবস্থিত। আর এখানেই সরস্বতী নদী এবং অলকানন্দা নদী মিশে কেশব প্রয়াগ সৃষ্টি করেছে। তাই এই গ্রামটি একটি উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় স্থান।

মানা গ্রামের দর্শনীয় স্থানগুলির মধ্যে বেদব্যাস কেভ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও এখান থেকেই একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান সাতোপন্থ লেক যাওয়ার হাঁটার রাস্তা শুরু হয়। এটি সবচেয়ে সুন্দর এবং প্রচলিত ট্রেকের মধ্যে অন্যতম। পৌরাণিক কাহিনীতে শোনা যায় এই রাস্তা দিয়ে পান্ডবেরা স্বর্গের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। চার দিনের এই ট্রেকের বৈচিত্র এবং প্রাকৃতিক শোভা সত্যিই দেখার মতো। না আমার এই পথে যাওয়া হয়নি, তবে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঝর্ণার উদ্দেশ্যে যাওয়ার জন্য আজকে সকাল-সকাল ব্রেকফাস্ট শেষ করে কিছু দরকারী জিনিস নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। আজকের দিনে প্রথম গন্তব্যস্থান বসুধারা ফলস্। মানা গ্রাম থেকে এই ঝর্ণাটির দূরত্ব আনুমানিক ৭ কিলোমিটার। এটি পায়ে হেঁটেই যেতে হয়।

এই খবরটিও পড়ুন

এতটাই সুন্দর ঝর্ণা আগে আমি কখনো দেখিনি। এখানে উঁচু উঁচু পাহাড়ের মাথায় শুদ্ধ পড়া বরফ এবং সকলের সূর্যের আলো আর নীল আকাশের মধ্যে সাদা মেঘের খেলা এক অদ্ভুত সুন্দর ছবি সৃষ্টি করে। কিছু ছবি রইল আপনাদের জন্য। কিন্তু এইসব ছবির থেকেও সুন্দর এখানে উপত্যকা। কখনও সবুজ ঘাসে ঢেকে থাকা উপত্যকা আবার কখনও পাথুরে রাস্তায় দিয়ে চলা আপনার এই পথ।

শোনা যায় এই ঝর্ণাটি এতটাই পবিত্র যে বহু মানুষ আসে শুধুমাত্র এর জল স্পর্শ করতে। বেশ কিছুটা সময় কাটিয়ে আবারও প্রকৃতির সৌন্দর্য উপভোগ করে চলে আসলাম মানা গ্রামে। মানা গ্রামে বাইকে লাগেজপত্র বেঁধে এখান থেকে বেরিয়ে পড়লাম বাড়ি ফেরার উদ্দেশ্যে। মানা গ্রাম থেকে কলকাতা দূরত্ব আনুমানিক ১৭০০ কিলোমিটার। তাই মানা গ্রাম থেকে বাইক স্টার্ট করে বেরিয়ে পড়লাম গোপেশ্বরের উদ্দেশ্যে। এখান থেকে গোপেশ্বর দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। প্রায় সাড়ে তিন ঘণ্টা বাইক চালিয়ে সন্ধের মধ্যেই পৌঁছে গেলাম গোপেশ্বরে।

রাতের খাবার খেয়ে তাড়াতাড়ি শুয়ে পড়া হল। পরের দিনের গন্তব্যস্থান অলমোড়া। গোপেশ্বর থেকে অলমোড়া দূরত্ব ২০০ কিলোমিটার, যা প্রায় ছয় ঘণ্টা লাগে। তাই পরের দিন সকালে তাড়াতাড়ি উঠে লাগেজপত্র গাড়িতে বেঁধে বেরিয়ে পড়লাম অলমোড়ার উদ্দেশ্যে। কখনো অলকানন্দা নদী আবার কখনও পিন্দার নদীর গতিপথের বিপরীতে ক্রমশ একের পর এক গ্রাম অতিক্রম করে প্রথমে কর্ণপোয়াগ, তারপর শিমলি, নারাইনবাজার, থারালি, তারপর গোমতী নদী ক্রস করে বৈজনাথ এবং কৌশনি, সোমেশ্বর হয়ে অলমোড়া। এই দুশো কিলোমিটারের রাস্তা খুবই সুন্দর এবং আকর্ষণীয়। গাড়ি-ঘোড়ার জ্যাম নেই বললেই চলে।

পরের দিন সকালে চলে আসুন অলমোড়া থেকে নৈনিতাল। নৈনিতালে একদিন থেকে ঘুরে দেখতে পারেন আশেপাশে বেশ কিছু স্পট। নৈনিতাল আগে যেহেতু বেশ কয়েকবার ঘোরা, তাই আর সময় নষ্ট না করে পরের দিন সকালবেলা বেরিয়ে পড়লাম বারেলি হয়ে লখনউয়ের উদ্দেশ্যে। আলমোড়া থেকে লখনউয়ের দূরত্ব ৪৫০ কিলোমিটার। তবে বেশ কিছুটা পাহাড়ি রাস্তা থাকার কারণে আপনার প্রায় বারো ঘণ্টা লেগে যাবে। আর রাতের লখনউ পৌঁছে প্রতিবারের মতো আমার প্রিয় তুন্ডে কাবাব। পরের দিন লখনউ থেকে বেনারস অথবা বুদ্ধগয়া। তারপরে দিন কলকাতা।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed