Saraswati Puja 2025: বিদ্যা নয়, সরস্বতী আসলে কী তান্ত্রিক দেবী?
স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে দিকে দিকে আরাধিত হচ্ছেন বিদ্যার দেবী সরস্বতী। বাগদেবী আরাধনায় ব্যস্ত সকলেই। তিনি শ্বেত শুভ্রা, পরনে তাঁর সাদা শাড়ি। এক হাতে বীণা অন্য হাত অভয় মুদ্রা। কিন্তু প্রশ্ন হল তিনি কি শুধুই বিদ্যা এবং জ্ঞানের দেবী? বাংলা ছাড়াও মাঘ মাসের শুক্লা পঞ্চমী তিথিতে গোটা দেশ জুড়েই তিনি পূজিত হন।
বাগদেবীর অপর নাম বাণী বা ভারতী। তবে সারা দেশের সঙ্গে কিন্তু বাংলায় দেবীর রূপের মধ্যে পার্থক্য আছে। সেই রূপে দেবী চতুর্ভুজা। তাঁর এক হাতে বীণা, একহাতে রুদ্রাক্ষের মালা, এক হাতে পুস্তক এবং অন্য হাত অভয় মুদ্রায় রয়েছে। তিনি আসীন এক শ্বেত শুভ্র পদ্মের উপরে। পাশে বিরাজমান বাহন রাজহংস।
ভাগবত মতে, দেবী হলেন ব্রহ্মার মানসকন্যা আবার তিনিই হলেন ব্রহ্মার স্ত্রীও। আবার ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মতে লক্ষ্মী এবং সরস্বতী দুজনেই হলেন বিষ্ণুর পত্নী। বিষ্ণুর নির্দেশেই তিনি ব্রহ্মাকে স্বামী হিসাবে গ্রহণ করেন।
দেবী দশ মহাবিদ্যায় দশটি অবতারের কথা জানেন সকলেই। সেই আদ্যা শক্তি মহামায়ার দ্বিতীয় মহাবিদ্যা দেবী তারার অপর নাম হল নীল সরস্বতী। তন্ত্রসাধকদের কাছে নীল সরস্বতী পুজো হল তন্ত্রসাধনার মহোৎসব। চন্ডীপাঠের মন্ত্র মন দিয়ে শুনলে দেখা যায় সেখানে যে তিন দেবীর উল্লেখ আছে তাঁরা হলেন মহাকালী, মহালক্ষ্মী এবং মহাসরস্বতী। বাংলা ব্যতিত গোটা ভারতেই এই চতুর্ভূজা, ত্রিনেত্র বিশিষ্ট মহাসরস্বতী দেবীর পুজো হয়।
সরস্বতী হলেন শুচিতার প্রতীক। জ্ঞান হল নিরাকার এবং জ্যোতির্ময়। আবার জ্ঞানই হল পরম ব্রহ্ম। তাই সবকিছুই রং বিহীন, শুধুই সাদা। সরস্বতীর বাহন হিসেবে ময়ূর এবং হাঁস দুই প্রাণীকেই পূজিত হতে দেখা যায় দেশের নানা প্রান্তে। ময়ূর হল সৌন্দর্যর প্রতীক আর হাঁস হল সেই পরমহংস যে কিনা দুধ এবং জল মিশিয়ে দিলে তার মধ্যে থেকে দুধটুকু আলাদা করে পান করতে পারে। অর্থাৎ জ্ঞান থেকে সার তত্ত্বটি আয়ত্ত করার বিশেষ গুণ রয়েছে তাঁর।
অন্য এক মতে সরস্বতী শব্দের অর্থ হল, যিনি সরস ভাবে বহমান। বিশ্বাস, ব্রহ্মদেবের জ্ঞান বিশ্বলোকে বয়ে নিয়ে আসেন তিনিই। তিনি বিরাজমান নদী রূপেও। যা উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজে এসে গঙ্গা-যমুনার সঙ্গে মিশে গিয়েছে। তাই অনেক জায়গায় তিনি জলের দেবী হিসাবে পূজিতা।
দেশের নানা স্থানে দেবী পূজিত হন মাতঙ্গী রূপেও। দশমহাবিদ্যার নবম রূপ দেবী, মাতঙ্গী। কেউ কেউ বলেন তিনি হলেন দেবী সরস্বতীর তান্ত্রিক রূপ। বাগদেবীর মতো তিনিও বিদ্যা ও সঙ্গীতের দেবী।
