‘আমরা বিজেপির মতো নই, কুম্ভমেলায় যেমন হল’, বানতলা কাণ্ডে ক্ষতিপূরণ ও তদন্তের নির্দেশ মেয়রের

খাস কলকাতায় ঘটেছে মর্মান্তিক দুর্ঘটনা। বানতলার ট্যানারির পাইপলাইন পরিষ্কার করতে নেমে তিন সাফাইকর্মীর মৃত্যু হয়েছে। লেদার কমপ্লেক্সের থানার অন্তর্গত বানতলায় মৃত্যু হয়েছে কেএমডিএ’র তিনজন সাফাইকর্মীর। তাঁদের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ট্যানারির বর্জ্যের দুর্গন্ধে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিনজন শ্রমিকের। কলকাতা পুরসভা এই তিনজনকে সাফাইয়ের কাজে নিয়োগ করেছিল। আজ, রবিবার দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করতে গিয়ে মৃত্যুর কারণ খুঁজতে তদন্তের নির্দেশ দেন মেয়র ফিরহাদ হাকিম। ক্ষতিপূরণের ঘোষণা করেন। আর একই সঙ্গে কুম্ভমেলার প্রসঙ্গ টেনে বিজেপিকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি।
এদিকে পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত তিন সাফাইকর্মীর নাম ফরজেম শেখ, হাসি শেখ এবং সুমন সর্দার। মৃতদের মধ্যে দু’জনের বাড়ি মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানা এলাকায়। আলিমুদ্দিন শেখ নামে মুর্শিদাবাদের এক ঠিকাদারকে এই ম্যানহোল পরিষ্কারের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। সেই কাজ চলার সময়ই দুর্ঘটনা ঘটে। এই ঘটনা নিয়ে ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘কেন তিনজন শ্রমিককে ম্যানহোলে নামতে হল সেই কারণ খতিয়ে দেখা হবে। মৃত শ্রমিকদের পরিবার পিছু ১০ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সাহায্য দেওয়া হবে। আমরা ইঞ্জিনিয়ারদের পাঠিয়েছি তদন্ত করার জন্য। তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। দুঃখজনক ঘটনা। আমরা মৃতদের পরিবারের পাশে আছি। ম্যানহোলে কীভাবে মৃত্যু হল সেটা তদন্ত করতে বলেছি।’
আরও পড়ুন: সরস্বতী পুজোর দিনই গৃহবধূকে ধর্ষণ করার অভিযোগ, চিৎকারে খুনের চেষ্টা ব্যর্থ জয়নগরে
অন্যদিকে আজ, রবিবার সকালে লেদার কমপ্লেক্সের ৪৫২ নম্বর প্লটে ট্যানারির পাইনলাইন পরিষ্কার করতে নেমেছিলেন শ্রমিকরা। পাইপলাইন পরিষ্কার করতে নামার পর দীর্ঘক্ষণ তাঁদের কোনও সাড়াশব্দ পাওয়া যাচ্ছিল না। ফারজেম শেখ, হাসি শেখ এবং সুমন সর্দার—তিন শ্রমিকের কেউই বেরিয়েও আসছিলেন না। তখন সন্দেহ হওয়ায় খবর দেওয়া হয় থানায়। ঘটনাস্থলে ছুটে আসে লেদার কমপ্লেক্স থানার পুলিশ এবং উদ্ধারকারী দল। উদ্ধার করা হয় তিন যুবকের দেহ। বিজেপি যাতে এই দুর্ঘটনাকে নিয়ে নোংরা রাজনীতি করতে না পারে তার জন্য মেয়রের বক্তব্য, ‘আমরা বিজেপির মতো নই, যে প্রকৃত মৃত্যুর ঘটনা চেপে গিয়ে গঙ্গায় দেহ ভাসিয়ে দেব। কুম্ভমেলায় যেমনটা হল।’
আরও পড়ুন: নিকাশি নালা পরিষ্কার করতে নেমে প্রাণ হারালেন তিন সাফাইকর্মী, বানতলায় আলোড়ন
এছাড়া দেহ তিনটি পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তে পাঠায়। ভিতরে আর কেউ আটকে আছেন কিনা সেটা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিক তদন্তে অনুমান, বর্জ্যের দুর্গন্ধে দমবন্ধ হয়ে মৃত্যু হয়েছে তিন শ্রমিকের। এখন ময়নাতদন্তের রিপোর্ট মিললেই মৃত্যুর আসল কারণ সামনে আসবে। নিয়ম মেনে সব সুরক্ষার বন্দোবস্ত করে ওই শ্রমিকরা পাইপলাইন পরিস্কার করতে নেমেছিলেন কি? উঠছে প্রশ্ন। তবে পাইপলাইন ফেটে ভিতরে পড়ে যান তিনজন বলে মনে করছেন পুলিশ কর্তারা। তাঁদের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ এবং দমকল। এই ম্যানহোল বেশ গভীর। প্রায় ১০ ফুট গভীর। মেয়রের কথায়, ‘বললেও কর্মীরা অনেক সময় শোনেন না। এক্ষেত্রে কী হয়েছে, সেটা খতিয়ে দেখা হবে।’