সেই SSKM, চাদরে পেঁচিয়ে মাকে নিয়ে যাচ্ছেন ছেলে! আর সামনের কেবিনে ‘কাকু’….. – Bengali News | Son wraps mother in sheet without getting stretcher, picture of inhumanity in SSKM
কলকাতা: নিয়মের গেঁরো। অসুস্থ মাকে হাসপাতালে নিয়ে আসার সময়ে তাড়াহুড়োর মাথায় পকেটে আধার ঢোকাতে ভুলে গিয়েছিলেন ছেলে। আর SSKM হাসপাতালে পৌঁছেও মায়ের কপালে জুটল না স্ট্রেচার। অগত্যা গায়ে দেওয়ার চাদরে মাকে শুইয়ে চার কোণা দু’জনে ধরে হাসপাতালের ওয়ার্ডে নিয়ে যাচ্ছিলেন ছেলে ও তাঁর এক সহযোগী। বৃহস্পতিবার সকালে সুজয় কৃষ্ণ ভদ্র ওরফে কালীঘাটের ‘কাকু’র ওয়ার্ডের সামনে থেকে অসুস্থ বৃদ্ধাকে চাদরে পেঁচিয়ে নিয়ে যাওয়ার সময়ে TV9 বাংলার ক্যামেরায় ধরা পড়ল মর্মান্তিক ছবি। দুর্নীতিতে অভিযুক্ত রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, সুজয়কৃষ্ণ ভদ্র মতো ব্যক্তিদের জন্য হাসপাতাল বিশেষভাবে বেডের ব্যবস্থা করে দিচ্ছে, তখন সেই সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালেই ধরা পড়ল চরম অমানবিকতার ছবি। প্রশ্ন উঠছে আম আদমির জন্যই কি তবে এত নিয়ম?
রিষড়ার বাসিন্দা বছর পঁচাত্তরের বৃদ্ধাকে জেনারেল সার্জারির ওপিডি-তে দেখাতে আসেন তাঁর ছেলে। বাড়ি থেকে গাড়ি করে আনেন। কিন্তু হাসপাতালের সামনে থেকে প্রয়োজন ছিল অ্যাম্বুলেন্সের। অভিযোগ, আধার কার্ড না থাকায় জরুরি বিভাগের সামনে থেকে ট্রলি পাওয়া যায়নি। এই পরিস্থিতিতে বাধ্য হয়ে ছেলে নিজের পরনের চাদরে পেঁচিয়ে মাকে জরুরি বিভাগে নিয়ে যান।
বেশ খানিকটা রাস্তা। মাঝেমধ্যে ভার সহ্য করতে না পেরে মাকে মাটিতে রাখছেন। একটু জিরিয়ে ফের নিয়ে যাচ্ছেন। ছেলেকে সাহায্য করছেন তাঁর এক বন্ধু। সুজয়কৃষ্ণ ভদ্রের কেবিনের সামনে নিয়ে যাওয়ার সময়েই সেই ছবি ক্যামেরাবন্দি হয়েছে TV9 বাংলার।
এই খবরটিও পড়ুন
হাঁপিয়ে গিয়ে মাকে যখন মাটিতে শুইয়েছেন ছেলে, তখন মা ক্যামেরার সামনে বললেন, “এ তো আমাদের কপাল। যা কষ্ট দেয় ইশ্বরই দেয়। কারোর দোষ নেই। সব আমার কপালের দোষ।”
আর ছেলে বললেন, “মানবিকতা বলে কী কিছু আছে? মানুষ মরে যাক, কিন্তু ওরা আইনের ফাঁকে যাবে না। আমার কাছে সবই আছে। কিন্তু বাড়ি থেকে বেরনোর সময়ে নিয়ে বেরোতে ভুল হয়ে যায়, তখন মায়ের যা অবস্থা ছিল, মাথা কাজ করছিল না।”
ছেলের বয়স প্রায় পঞ্চান্ন। বৃদ্ধার আশির কাছে বয়স। এই পরিস্থিতি প্রশ্ন উঠছে, কোনও ভাবেই কি স্ট্রেচার দেওয়া যেত না। যেখানে বেড না থাকলেও হেভিওয়েটদের জন্য বিশেষভাবে ব্যবস্থা করে দেওয়ার মতো অভিযোগ রয়েছে। যদিও এবিষয়ে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।