Pakistan woman doctors: চাপা থাকে মহিলা চিকিৎসকদের হয়রানির কথা, সামনে আনল 'আরজি কর' - Bengali News | Following RG Kar case, dozens of Pakistan's female doctors told their account of harassment - 24 Ghanta Bangla News

Pakistan woman doctors: চাপা থাকে মহিলা চিকিৎসকদের হয়রানির কথা, সামনে আনল ‘আরজি কর’ – Bengali News | Following RG Kar case, dozens of Pakistan’s female doctors told their account of harassment

0

পাকিস্তানের মহিলা চিকিৎসকরা Image Credit source: Facebook

ইসলামাবাদ: আরজি কর হাসপাতালে ৩১ বছর বয়সী প্রশিক্ষণার্থী মহিলা চিকিৎসকের ধর্ষণ ও হত্যা খুলে দিয়েছে প্রতিবাদের আগল। বাংলা ছাড়িয়ে সেই প্রতিবাদের আঁচ ছড়িয়ে পড়েছে গোটা ভারতে, ভারতের বাইরেও। এমনকি, এর প্রভাব পড়েছে প্রতিবেশি দেশ পাকিস্তানেও। পাকিস্তানের হাসপাতালে কর্মরত মহিলা চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, নিয়মিত তাদের পুরুষ সহকর্মী, রোগী এবং রোগীদের পরিবারের সদস্যদের যৌন হয়রানি, হিংসা এবং মৌখিক নির্যাতনের শিকার হতে হয়। কিন্তু, সেই সব ঘটনার কথা চাপাই থাকে। অনেকেই এই সকল অপরাধের রিপোর্ট করতে ভয় পান। নির্যাতিতারা প্রায়শই বলেন, কেউ তাদের কথা বিশ্বাস করবে না। অনেকে ভয় পান চাকরি হারানোর বা সম্মানহানির। তাই, সেই সব ঘটনা চেপে যান তারা। তবে, আরজি করের ঘটনার পর, সংবাদমাধ্যম বিবিসির কাছে পাক মহিলা চিকিৎসকদের অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁরা তাঁদের নিরাপত্তা নিয়ে চিন্তিত। কী ঘটে তাদের সঙ্গে?

নিরাপত্তার কারণে, পাক মহিলা চিকিৎসকদের প্রত্যেকেই তাঁদের পরিচয় গোপন রেখেছেন। নুসরত (ছদ্মনাম) নামে এক মহিলা চিকিৎসক জানিয়েছেন, কয়েক মাস আগে একজন তরুণী চিকিৎসক কাঁদতে কাঁদতে তাঁর কাছে এসেছিলেন। জানা গিয়েছিল, শৌচাগার ব্যবহার করার সময় হাসপাতালের এক পুরুষ চিকিৎসক, শৌচাগারের দেওয়ালের একটি ছিদ্র দিয়ে ওই তরুণী চিকিৎসকের ভিডিয়ো তুলেছিলেন। পরে ওই ভিডিয়োটি ব্যবহার করে তাঁকে ব্ল্যাকমেইলও করেন। নুসরত জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সাইবার অপরাধ দমন শাখায় অভিযোগ জানানোর পরামর্শ দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, তরুণী তা করতে চাননি। তিনি জানান, ঘটনাটা জানাজানি হোক, তাঁর পরিবার বা শ্বশুরবাড়িতে পৌঁছে যাক, তা তিনি চান না। ডা. নুসরতের দাবি, তিনি আরও অন্তত তিনটি এই ধরনের ঘটনার কথা জানেন। শেষ পর্যন্ত পুলিশের চাপে, অভিযুক্ত পুরুষ চিকিৎসকটি ওই ভিডিওটি মুছে ফেলেছিলেন। এছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও পদক্ষেপ করা যায়নি। আর শৌচাগারের ওই ছিদ্রটি ঢেকে দেওয়া হয়েছিল।

ডা. আমনা (ছদ্মনাম) নামে আরেকজন জানিয়েছে, পাঁচ বছর আগে তিনি এক সরকারি হাসপাতালে আবাসিক মেডিকেল অফিসার ছিলেন। সেই সময় এক সিনিয়র চিকিৎসক, তাঁকে নিয়মিত হয়রানি করতেন। আমনার দাবি, তাঁর হাতে কোনও ফাইল দেখলেই, তিনি সেটার উপর ঝুঁকে পড়ার চেষ্টা করতেন। মাঝেমাঝেই,অনুপযুক্ত মন্তব্য করতেন এবং তাঁকে নোংরাভাবে স্পর্শ করার চেষ্টা করতেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে জুটেছিল শুধুই উদাসীনতা। তাঁকে ঘুরিয়ে জিজ্ঞেস করা হয়, হয়রানির কী প্রমাণ আছে তাঁর কাছে? সাফ জানানো হয়েছিল, অভিযোগ জানিয়ে লাভ নেই। কেউ তাঁর কথা বিশ্বাস করবে না। আমনা জানিয়েছেন, কিছু মহিলা ওই চিকিৎসকের হয়রানির ভিডিয়োও রেকর্ড করেছিলেন। তার ভিত্তিতে ওই চিকিৎসককে শুধুমাত্র কয়েক মাসের জন্য অন্য ওয়ার্ডে স্থানান্তর করা হয়েছিল। এছাড়া আর কোনও শাস্তি দেওয়া যায়নি।

বিবিসি জানিয়েছে, এই কাহিনিগুলি কোনও বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, পাকিস্তানের মহিলা চিকিৎসকদের প্রত্যেকের সঙ্গে কখনও না কখনও এই ধরনের কোনও ঘটনা ঘটেছে। করাচির প্রধান পুলিশ সার্জন তথা পাকিস্তানের প্রথম ধর্ষণ সংকট কেন্দ্রের প্রধান, ড. সুমায়া তারিক সৈয়দের মতে, এই সমস্যার মূলে রয়েছে আস্থা ও জবাবদিহিতার অভাব। তিনি জানিয়েছেন, গত ২৫ বছরের চাকরিজীবনে তাঁকে প্রতিনিয়ত হিংসা এবং বিশ্বাসঘাতকতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হয়েছে। তিনি জানিয়েছেন, কয়েক বছর আগে খুন হওয়া এক ব্যক্তির ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বদলানোর দাবিতে তাঁকে একটি কক্ষে আটকে রেখেছিল তাঁর সহকর্মীরা। নতুন এক রিপোর্ট হাতে ধরিয়ে হুমকি দেওয়া হয়েছিল, তাতে স্বাক্ষর না করলে, তাঁর সঙ্গে যা খুশি তাই হতে পারে। তিনি অবশ্য তাতে রাজি হননি। এক পদস্থ চিকিৎসক এই ঘটনার জড়িত ছিলেন। কিন্তু, তাঁর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।

২০১০ সালে করাচির আরেকটি ঘটনার কথাও জানিয়েছেন তিনি। এক সরকারি হাসপাতালের এক পুরুষ ডাক্তার, একজন নার্সকে তাঁর হোস্টেলের ঘরে নিয়ে গিয়েছিলেন। সেখানে ওই ডাক্তারের আরও দুই ডাক্তার বন্ধুও ছিলেন। নার্সকে গণধর্ষণ করা হয়েছিল। এরপর, ওই নার্স হোস্টেলের ছাদ থেকে লাফ দিয়ে আত্মঘাতী হয়ে চেয়েছিলেন। প্রায় এক সপ্তাহ ধরে তিনি কোমায় ছিলেন। সুস্থ হওয়ার পরও তিনি মামলা করতে চাননি। ডা. সৈয়দের মতে, ওই নার্স যদি অভিযোগ জানাতেন, হয়তো ঘঠনার দায় তাঁর উপরই পড়ত। পাক পঞ্জাবের এক সরকারি হাসপাতালের আরেক মহিলা ডাক্তারও জানিয়েছেন, পাকিস্তানি মহিলাদের পক্ষে নির্যাতনের অভিযোগ করাটা কঠিন। তাঁর দাবি, যে পুরুষ ডাক্তাররা মহিলা ডাক্তারদের হয়রানি করে, তারা বা তাদের বন্ধুরাই হাসপাতাল কমিটিগুলিতে থাকে। ফলে সেই কমিটিগুলিতে কারও পক্ষে অভিযোগ দায়ের করা প্রায় অসম্ভব। অভিযোগ জানালে অভিযোগকারিনীর জীবনই কঠিন হয়ে পড়ে।

মজার বিষয় হল, এত অভিযোগ থাকা সত্ত্বেও, পাকিস্তানে মহিলা স্বাস্থ্য পরিষেবা কর্মীদের উপর হামলার কোনও সরকারি পরিসংখ্যান নেই। তবে, ২০২২ সালে ইউএস ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব হেলথের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, পাকিস্তানের ৯৫ শতাংশ নার্সই কর্মক্ষেত্রে অন্তত একবার হিংসার সম্মুখীন হয়েছে। ২০১৬ সালে লাহোরের এক সরকারি হাসপাতালের সমীক্ষাতেও বলা হয়েছিল, ২৭ শতাংশ নার্স যৌন হিংসার শিকার হয়েছেন। খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের এক সমীক্ষাতেও বলা হয়েছিল, ৬৯ শতাংশ নার্স এবং ৫২ শতাংশ মহিলা ডাক্তার কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীদের যৌন হয়রানির শিকার হয়েছেন।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed