Sweets: ১০০ বছরেও টাটকা মিষ্টি - Bengali News | The sweets which are still famous after 100 years - 24 Ghanta Bangla News

Sweets: ১০০ বছরেও টাটকা মিষ্টি – Bengali News | The sweets which are still famous after 100 years

0

১০০ বছর পরও পুরনো হয়নি এইসব মিষ্টি

প্রীতম দে

আগেকার মিষ্টির দোকান এখনকার মত ছিল না। সামনে শোকেস। ভেতরে জ্বল জ্বল করছে নানা রকম মিষ্টান্ন। দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে বিক্রি করছেন দোকানদার। ১০০ বছর আগেকার মিষ্টির দোকান কেমন ছিল? নবান্নের পাশে শিবপুর বাজারে বা জোড়াসাঁকোর কাছে, নতুন বাজারে গেলে বুঝতে পারবেন। শিবপুরের দুর্গা মিষ্টান্ন ভাণ্ডার বা নতুন বাজারের মাখনলাল এবং ওই চত্বরের আরও বেশকিছু দোকানে এখনও কাঠ আর পিতলের বড় বড় বারকোষ। সেখানে বৃত্তাকারে সাজানো নানা সন্দেশ মিষ্টি। কিছু বারকোষ কাঠের জাল আলমারির তাকে তোলা। ওটা স্টক। তো যাই হোক পুরনো দোকানের গল্প ছেড়ে একটু পুরোনো মিষ্টির কথায় আসা যাক। যাদবের যে সন্দেশ খেয়ে তারিফ করেছিলেন স্বয়ং শ্রীরামকৃষ্ণ। বারবার খেতে চাইতেন। আছে কি সেই মিষ্টি এখনও? আছে এবং ভাল বিক্রিও আছে।

বউবাজারে নব কৃষ্ণ গুঁইয়ের রাম বোঁদে মিষ্টি সিঙাড়া ছানার মুড়কির চাহিদা আজও বিদ্যমান। ছানার মুড়কি সাদা সাদা চৌকো চৌকো হয়। মুখে দিলেই ছানার স্বাদ পাওয়া যায়। মিষ্টি একেবারেই কম থাকে। “আমরাই ছানার মুড়কির জন্মদাতা। আমাদের ননী মালপুয়ার জন্য জন্মাষ্টমীতে এখনও লম্বা লাইন পড়ে যায়”, জানালেন এই প্রাচীন দোকানের কর্ণধার সুপ্রভাত দে।

একসময় ভবানীপুরে বলরামের ডালায় সকালের সন্দেশ বিকেলেই শেষ হয়ে যেত। বাসি মিষ্টি থাকবে না। সব টাটকা সবসময়। বলরাম মল্লিকের বয়স ১০০ পেরিয়েছে। বেশকিছু প্রাচীন মিষ্টি আজও ঠিক পুরনো পদ্ধতিতেই তৈরি করা হয়। তার মধ্যে আতা সন্দেশ, গুলি সন্দেশ আছে। “ওল্ড ইজ গোল্ড। পুরনো মিষ্টির কদর এখনও আছে। সেই কারিগর না থাকলেও বাবার থেকে শুনে সেই রেসিপিতেই বানানো হয়”, বললেন সুদীপ মল্লিক। বলরাম মল্লিকের এই প্রজন্মের কর্ণধার।

হাওড়ার বেতর একসময় বন্দর এলাকা ছিল । সে অনেকদিন আগের কথা। পুরনো জায়গাগুলোর মধ্যে অবশ্যই উঠে আসবে ব্যাতাই মিষ্টান্ন ভান্ডার। একশো বছর পেরিয়েছে। এখনও ক্ষীরের গুজিয়া আর রসগোল্লার নাম করে সবাই। এমনকি রসগোল্লার সৃষ্টি কর্তা যাঁরা তাঁরাও এই রসগোল্লায় মজেছেন। ব্যতাইয়ের বর্তমান কর্ণধার সৈকত পাল বলেন, “কারণ আমরা একশো বছর আগেকার ছানার কোয়ালিটি ধরে রাখার চেষ্টা করি। এবং সেটা যে সফল মানুষের প্রতিক্রিয়াতেই বুঝতে পারি। বলে না পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। আমাদের আজ এত নতুন নতুন সব আইটেম। কিন্তু পাবলিক ডিমান্ড এখনও পুরনো মিষ্টি।”

ঐশ্বর্য অভিষেকের বিয়ের মিষ্টি যে শতবর্ষ পুরনো দোকান থেকে গেছিল সেখানকার কথা না বললেই নয়। নকুড়ের সন্দেশ। সন্দেশ ছাড়া এরা আর কিছু বানান না। গোলাপি প্যাঁড়া। এমনি প্যাঁড়ার মত হলুদ নয়। গোলাপি রং। বাবু সন্দেশ। আবার খাবো। আবার খাবো নরম পাকের সন্দেশ। তাই জলদি জলদি খেয়ে ফেলতে হয়। মেয়াদ মাত্র ১২ ঘণ্টা। নকুড়ের হেদুয়ার দোকানটিও আগের মতই রেখেছেন কর্তৃপক্ষ। কাঠের বারকোষ। পুরোনো ছাপা বাক্স।
নকুড়ের এখনকার কর্ণধার পার্থ নন্দী বলেন, “আমরা পুরো দোকানটাই আগেকার স্টাইলে রেখেছি। আমাদের বাবা কাকারাও ইচ্ছে করেই বদলাননি। বাবু সন্দেশের মত পুরনো মিষ্টির জাদু যে এখনও ১০০ শতাংশ রয়েছে তার একটা কারণ স্বাদ এবং অবশ্যই এই দোকানের পুরনো পরিবেশ।”
সতীশ ময়রার আতা সন্দেশ। গোলাপ সন্দেশ। এই দুটো সন্দেশই ছাঁচে ফেলা সন্দেশ। কড়া পাকের। সেই পুরনো দিনের ছাঁচে ফেলেই আজও তৈরি হচ্ছে।

উত্তর পাড়া থেকে গঙ্গার ধার বরাবর জিটি রোড ধরে যেতে যেতে পড়বে ফেলু মোদক। আসল নাম ফেলু চরণ দে। প্রথম শুরু করেন মিষ্টি সৃষ্টি। মোদক তো সম্মানের পদবি। ১০০ পেরিয়েছে অনেকদিন । ফেলু মোদকের ঝুরো বোঁদে নিকুতি আর গজা বিখ্যাত। ঝুরো বোঁদে কোথাও পান কি? নিকুতি গজার স্বাদ একেবারে পুরনো সেই দিনের। কলকাতার সঙ্গে রীতিমত পাল্লা দিয়ে মিষ্টি করেন এঁরা। তাই একশো বছর আগেও এইসব মিষ্টি টাটকা ছিল। এখনও টাটকা আছে।

Source link

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

You may have missed