TET 2017: তৃণমূল ঘনিষ্ঠ বলেই বাড়ির কাছে পোস্টিং! শিক্ষক নিয়োগে নয়া অভিযোগে শোরগোল – Bengali News | Allegation who are close to tmc getting chance to job near jalpaiguri town tet 2017
কাউন্সেলিংয়ের জন্য অপেক্ষায় চাকরিপ্রার্থীরা। Image Credit source: TV9 Bangla
জলপাইগুড়ি: সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে ৯ হাজার ৫৩৩ প্রাথমিক শিক্ষক পদে নিয়োগ শুরু করেছে প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদগুলিকে এই মর্মে নোটিস দেওয়া হয়েছে। বহু কাঠখড় পুড়িয়ে নিয়োগ পাচ্ছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এদিকে সে প্রক্রিয়া এগোতেই নতুন অভিযোগ ওঠা শুরু। অভিযোগ উঠছে, তৃণমূল ঘনিষ্ঠ হলে বাড়ির কাছে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। আর তা না হলে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে বাড়ি পথে বহু কিলোমিটার দূরে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের কাউন্সেলিং নিয়ে এবার চাঞ্চল্যকর অভিযোগ জলপাইগুড়ি জেলা বিজেপির। বামপন্থী শিক্ষক সংগঠনের পর এবার সরব গেরুয়া শিবিরও। যদিও পাল্টা তৃণমূলের দাবি, এ অভিযোগের কোনও সারবত্তা নেই।
২০১৭ সালের অক্টোবরে টেটের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল। ২০২১ সালের জানুয়ারি মাসে পরীক্ষা হয়। পরের বছর তার ফলপ্রকাশ হয়। কিন্তু এই নিয়োগ নিয়ে জটিলতা তৈরি হওয়ায় মামলা গড়ায় সুপ্রিম কোর্টে। সম্প্রতি আদালতের নির্দেশে সংসদ নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু করেছে।
জেলাওয়াড়ি এই নিয়োগে জলপাইগুড়ি জেলায় নিয়োগপত্র হাতে পাবেন ১৩৯ জন। বৃহস্পতিবার সকাল থেকে জলপাইগুড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদ ভবনে মেধাতালিকায় থাকাদের কাউন্সেলিং ছিল। দূর দূরান্ত থেকে এসেছেন কেউ কেউ। কেউ আবার কোলে বাচ্চা নিয়ে এসেছেন। তাঁদের অভিযোগ, সকাল থেকে এসে বসে থেকে রাত ১টা নাগাদ নিয়োগের কাগজ হাতে পেয়েছেন। স্বভাবতই চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে তাঁদের। একে তো ঠান্ডার রাত, তার মধ্যে যাঁদের সঙ্গে বাচ্চা রয়েছে, তাঁদের নাজেহাল দশা।
এই খবরটিও পড়ুন
মীনা কুমারী নামে এক নবনিযুক্ত শিক্ষিকা জানান, মালদহ থেকে এসেছেন বাচ্চা নিয়ে। বুধবার রাত থাকতে থাকতে এসেছিলেন তিনি। বৃহস্পতিবার গভীর রাত অবধি এখানেই কেটে গেল। এ ভোগান্তি তো এক প্রকার।
আরেক নবনিযুক্ত শিক্ষক অপু রায় অভিযোগ করেন, কাউন্সেলিং নিয়ে তিনি একেবারেই সন্তুষ্ট নন। তিনি চেয়েছিলেন তাঁর বাড়ির কাছে একটি স্কুলে নিয়োগ। সেখানে ফাঁকাও ছিল। কিন্তু তিনি যখন কাউন্সেলিং বোর্ডে যান তখন তাঁকে বলা হয় ওই স্কুলে ফাঁকা নেই। একপ্রকার বাধ্য হয়ে তাকে বাড়ি থেকে প্রায় ৬০ কিলোমিটার দূরে ময়নাগুড়ির একটি স্কুলে নিয়োগ দেওয়া হয়। নিয়োগে অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ তাঁর। আর এই কারণেই তিনি সন্তুষ্ট নন।
এ নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে কাউন্সেলিং নিয়ে বড়সড় অভিযোগ তোলে বিজেপি প্রভাবিত শিক্ষক সংগঠন অখিল ভারতীয় রাষ্ট্রীয় শৈক্ষিক মহাসংঘ। সংগঠনের জেলা কমিটির সদস্য জয়ন্ত করের অভিযোগ, এই কাউন্সেলিং লোক দেখানো। তিনি বলেন, “তৃণমূল ঘনিষ্ঠদের নাম প্যানেলের নীচের দিকে থাকলেও জলপাইগুড়ি শহরের কাছাকাছি নিয়োগ পাচ্ছেন। অথচ যাঁরা সে দলের ঘনিষ্ঠ নন, বাড়ি থেকে দূরে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে। তাঁরা কাউন্সেলিংয়ের সময় পছন্দের জায়গা চাইলে বলা হয়েছে এখানে অন্য লোক আগেই নিয়ে গিয়েছে। এঁরা তো আবার প্রতারণার শিকার হলেন।”
তবে এই পক্ষপাতের অভিযোগ উড়িয়ে তৃণমূল প্রভাবিত প্রাথমিক শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি স্বপন বসাক বলেন, “বিজেপির এসব কথার ভিত্তিই নেই। কঠোর পুলিশি নিরাপত্তার মধ্যে কাউন্সেলিং হয়েছে। তালিকা এখনও প্রকাশ হয়নি। আর আমরাও কেউ নিয়োগ প্রক্রিয়ায় জড়িত নই।”