Kalighater Kaku Voice Sample Test: যাঁর স্বর নিয়ে এত সরগরম, কীভাবে হল সেই পরীক্ষা? কী কী প্রশ্ন করা হয়? – Bengali News | Kalighater Kaku Voice Sample Test: ED Collected Voice Sample of Sujaykrishna Bhadra, Key accused of Recruitment Scam, Know How the Voice Sample is Collected
কলকাতা: নিয়োগ দুর্নীতি কাণ্ডে অন্যতম অভিযুক্ত সুজয় কৃষ্ণর ভদ্রর কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে বুধবার। তদন্তকারী সংস্থা ইডি-র দাবি, দুর্নীতির তদন্তে সুজয়ের এই ‘গলার আওয়াজ’ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সেই কারণে ‘কাকুর’ কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা করতে এতটা মরিয়া হয়ে উঠেছিল তদন্তকারী আধিকারিকরা। কিন্তু কীভাবে হয় এই ভয়েস স্যাম্পেল পরীক্ষা? কী কী পরীক্ষা করেই বা দেখা হয়? অনেকেই আছেন যাঁরা বিষয়টি জানতে উদগ্রীব। পড়ে নেওয়া যাক পুরো প্রক্রিয়াটি…
কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষা কী?
ডাক্তারি পরিভাষায় যাকে বলে ফরেন্সিক ভয়েস অ্যানালিসিস। কণ্ঠস্বরের ‘পিচ’ বা তীক্ষ্ণতা এক এক মানুষেক ক্ষেত্রে এক এক মানুষের ক্ষেত্রে এক এক রকম হয়। ফরেন্সিক ভয়েস অ্যানালিসিসের মাধ্যমে, দুটি কণ্ঠস্বরের নমুনা একই ব্যক্তির কি না,তা বোঝা যায়। যাঁরা এই কণ্ঠস্বরের নমুনা বিশ্লেষণ করেন,তাঁরা কোনও ব্যক্তির কথা বলার ধরন, কীভাবে কথা বলছেন,কথা বলার সময় কোথায় কোথায় থামছেন সেগুলি যাচাই করে দেখেন। এরপর পূর্ববর্তী নমুনার সঙ্গে কতটা মিলছে,তা পরীক্ষা করে দেখা হয়।
এই খবরটিও পড়ুন
সিনিয়র নাক-কান-গলা বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক অর্জুন দাসগুপ্ত বলেছেন, “ভয়েস স্যাম্পেল সংগ্রহের একটি নির্দিষ্ট প্রক্রিয়া রয়েছে। সাধারণত যাঁর নমুনা সংগ্রহ করা হবে, তাঁকে কোনও একটি লেখা পড়তে বলা হয়। তখন সেই কণ্ঠস্বরকে ডিজিটালি রেকর্ড করা হয়। এরপর অন্য কোনও জায়গা থাকে পাওয়া কণ্ঠস্বরের নমুনার সঙ্গে সেটি মিলিয়ে দেখা হয়। এর থেকেই বোঝা যায় দু’টি কণ্ঠস্বর একই ব্যক্তির কি না।”
ভয়েস স্যাম্পেল নেওয়ার পদ্ধতি
কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষার জন্য সর্বপ্রথম তদন্তকারী সংস্থাকে আদালতের দ্বারস্থ হয়ে এই নমুনা পরীক্ষা করার জন্য আবেদন করতে হবে। আদালত যদি অনুমতি দেয়, তাহলে সাউন্ড প্রুফ ও ইকো প্রুফ ঘরে নমুনা নেওয়া হয়ে থাকে।
নমুনা নেওয়ার জন্য ব্যবহার করা হবে ভয়েস রেকর্ডার যন্ত্র। এসডি (SD) কার্ডে সেই নমুনা সংগ্রহ করে ফরেন্সিক বিভাগ। নমুনা নেওয়ার পর ফরেন্সিক দফতরে সেই স্বরের নমুনা নিয়ে আসা হবে। এরপর ভয়েস স্পেক্ট্রমিটার সফটওয়ারের লাইসেন্সড ভার্সনে পরীক্ষা করা হবে।
এই দেশে সেমি অটোমেটিক স্পেকটোগ্রাফিক পদ্ধতির মাধ্যমে রেকর্ড করা হয়।
নমুনা সংগ্রহর সময় কী কী প্রশ্ন করা হয়?
নমুনা নেওয়ার সময় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির নাম পরিচয় জানতে চাওয়া হয়। এর পাশাপাশি আরও অনেক প্রশ্নও থাকে। তবে প্রাথমিকভাবে নাম পরিচয় বলানো হয়। যে কণ্ঠস্বরের সঙ্গে পরীক্ষা করা হবে, সেখানে থাকা কিছু কিছু শব্দ বলিয়ে নেওয়া হয়। কণ্ঠস্বর বাড়াতে-কমাতে কৌশল নেওয়া হয়। মাঝেমধ্যে প্রশ্নের মাধ্যমে ওই ব্যক্তিকে উত্তেজিত করে রাগিয়েও দেওয়া হয়।
নমুনা পরীক্ষার পর সরাসরি তদন্তকারী সংস্থাকে পজিটিভ অথবা নেগেটিভ রিপোর্ট দেয় ফরেন্সিক বিভাগ।
কণ্ঠস্বরের নমুনা পরীক্ষায় কী কী বিষয় দেখা হয়?
কণ্ঠস্বরে ব্যবহৃত শব্দের অ্যাপ্লিটিউড (Amplitude) বা প্রসস্থতা। গলার পিচ কতটা জোরে বা আস্তে হচ্ছে। অর্থাৎ ব্যক্তির গলার স্বর কেমন তাও দেখা হয়।
এই পরীক্ষা নেওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা কোথায়?
যার ‘ভয়েস স্যাম্পেল’ নেওয়া হবে সেই ব্যক্তির যদি ওষুধ চলে তাহলে স্বর বদল হতে পারে। সেক্ষেত্রে নাও মিলতে পারে কণ্ঠস্বর।
যদি ওই ব্যক্তি ঠান্ডা লেগে থাকে তাহলেও স্বর মেলার সম্ভাবনা কম থাকে।
যিনি নমুনা নেবেন তাঁর অভিজ্ঞতার উপরেও পরীক্ষার ফলাফল নির্ভর করে।
সঠিকভাবে নমুনা সংগ্রহ করতে ফরেন্সিক কৌশলও করে…
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায়, যে সময় ব্যক্তির কণ্ঠস্বর নেওয়া হবে তিনি নিজেকে বাঁচানোর চেষ্টা করেন। সেই জন্য ফরেন্সিক বিভাগের বিশেষজ্ঞরা স্বরবর্ণ উচ্চারণে বাড়তি গুরুত্ব দেন। কারণ স্বরবর্ণ উচ্চারণের ক্ষেত্রে কারচুপি করা কঠিন।
নমুনা নেওয়ার সময় ফরেন্সিক বিভাগের বিশেষজ্ঞ ও হাসপাতালের তরফে চিকিৎসক থাকতে হয়। কিছু ক্ষেত্রে ম্যাজিস্ট্রেটের সামনেও নমুনা নেওয়া হয়ে থাকে।