Firhad Hakim: ‘চাকরির জন্য টাকা নেওয়া আর মায়ের শরীর থেকে মাংস কেটে নেওয়া সমান’, বিস্ফোরক ফিরহাদ – Bengali News | Urban Minister and chetla Mayor Firhad Hakim admitted to recruitment scam

কলকাতা: বছরের শুরুতেই বিস্ফোরক পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম। চাকরি চুরি হয়েছে, মানলেন ফিরহাদ। তিনি বললেন, ‘চাকরির জন্য টাকা দেওয়া আর মায়ের শরীর থেকে মাংস কেটে নেওয়া এক।’ তিনি আরও বলেছেন, “স্বীকার করতে বাধা নেই. দলের একাংশ দুর্নীতি করেছে।” তৃণমূলের প্রতিষ্ঠা দিবসে এমনই বিস্ফোরক রাজ্য মন্ত্রীসভার নম্বর টু-র। দলের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিত একটি অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে প্রকাশ্যেই ফিরহাদ বললেন, “আমরা তৃণমূল কংগ্রেস একটা সংসার। কিছু মানুষ নিশ্চিত ভাবে অন্যায় করেছেন। দুর্নীতি জড়িয়ে পড়েছেন। কিন্তু তা বলে আমরা সবাই নই। হ্যাঁ, আমার বাড়িতেই সিবিআই তল্লাশি চালিয়েছে। তবে চেতলার বুকে কোনও মানুষ দাঁড়িয়ে আজ বলতে পারবে, ফিরহাদ হাকিম কোনও দুর্নীতি করেছেন।২৫ বছরে কোনও কাউন্সির, কোনও প্রমোটার, কারোর কাছ থেকে হাত পেতে একটা পয়সা নিয়েছেন।”
দলের প্রতিষ্ঠা দিবসের দিনই ফিরহাদের গলায় শোনা গেল অনুশোচনার সুর। তিনি বললেন, “চাকরির জন্য টাকা দেওয়া আর মায়ের শরীর থেকে মাংস কেটে নেওয়া একই বিষয়।” অর্থাৎ চাকরি ক্ষেত্রে দুর্নীতি ঠিক কতটা গুরুতর অপরাধ, সেটাই বোঝালেন তিনি। পাশাপাশি এটাও স্পষ্ট করে দেন, চাকরিতে দুর্নীতি দল কোনও ভাবেই বরদাস্ত করবে না। ইতিমধ্যেই নিয়োগ দুর্নীতিতে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার জালে দলের একাধিক হেভিওয়েট নেতা-মন্ত্রী বিধায়ক, এমনকি সরকারি আমলারাও। তবে এ বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি নিজেকে ক্লিনচিটও দেন তিনি।
ফিরহাদের এই বক্তব্যের পরই সরব বিজেপি। বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, “তৃণমূল মানেই চোর। যে ফিরহাদ আজকে বলছেন, দলের কয়েকজন দুর্নীতি করেছেন, সেই ফিরহাদই পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের গ্রেফতারির কয়েকদিন পর বলেছিলেন, যে ভুল হয়েছে পার্থদার একার ভুল নয়, কালেক্টিভ রেসপন্সিবিলিটি। এই দুর্নীতি তৃণমূলের সবার দুর্নীতি। ইডি-সিবিআই-এর কথা আদালতে গিয়ে বলছেন না কেন মুখ্যমন্ত্রী? আদালতে তো মানুষের টাকা খরচ করে বারবার যাচ্ছেন। আবার পরাজিত হয়ে ফিরেও আসছেন।”
এই খবরটিও পড়ুন
প্রসঙ্গত, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী দাবি করে আসছিলেন, ইডি-সিবিআই- রাজনৈতিক কারণেই সক্রিয়। কিছুদিন আগেই গত বছরের অগস্ট মাসে একটি অনুষ্ঠানে মুখ্য়মন্ত্রী বলেছিলেন, “পার্থ যদি চোর হয়, তাহলে আইন বিচার করবে। কিন্তু পার্থও চোর, কেষ্টও চোর, ববিও চোর, অভিষেকও চোর, মমতাও চোর? সবাই চোর আর আপনারা সাধু? এই নিয়ে জীবন চলবে না। পার্থর ব্যাপার হলেও মমতাকে টেনে আনা হয়, ববির ব্যাপার হলেও মমতাকে টেনে আনবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কি মাথা নত করে রাজনীতি করতে এসেছে? সমাজসেবা করতে এসেছে।” দলের নেত্রী যখন এই ধরনের কথা বলেছেন, তার কিছুদিনের মধ্যেই দলের একাংশ যে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত, তা কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন ফিরহাদ। স্বাভাবিকভাবেই রাজনৈতিক বিতর্ক তুঙ্গে।