নব্যতা হারানোর কারণে মুড়িগঙ্গা নদী দিয়ে যাত্রী পারাপারে সমস্যা হচ্ছে
দক্ষিণ ২৪ পরগনা: ধীরে ধীরে নাব্যতা হারাচ্ছে মুড়িগঙ্গা। নাব্যতা কমে যাওয়ার কারণে সমস্যায় পড়েছে সাধারণ মানুষ। মুড়িগঙ্গা নদীতে পলি জমে যাওয়ায় ভাটার সময় নাব্যতা কমে যায়। ফলে প্রত্যেকদিন প্রায় ৬ ঘণ্টার বেশি সময় বন্ধ রাখতে হয় ভেসেল পরিষেবা। প্রতিদিন এক পরিস্থিতির সম্মুখীন হওয়ায় বিরক্ত দ্বীপাঞ্চলের মানুষজন।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার কাকদ্বীপ ও সাগর দ্বীপের মাঝ দিয়ে বয়ে যাওয়া মুড়িগঙ্গা নদীতে পলি জমে যাওয়ায় ভাটার সময় নাব্যতা কমে যায়। ফলে প্রত্যেকদিন প্রায় ৬ ঘণ্টার বেশি সময় বন্ধ রাখতে হয় ভেসেল পরিষেবা। কেবলমাত্র জোয়ারের সময় ভেসেল পরিষেবা স্বাভাবিক থাকে। আর ভাটার সময় নদী পারাপারের জন্য ছোটো ডিঙি নৌকো বা ভুটভুটির উপর ভরসা করতে হয় নিত্যযাত্রীদের। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মানুষ জামা কাপড় গুটিয়ে নেমে পড়ে মুড়িগঙ্গার চড়ায়। ভেসেল ঘাট থেকে প্রায় এক কিলোমিটারের বেশি জল কাদার উপর দিয়ে মুড়িগঙ্গা নদীর মাঝ বরাবর গিয়ে এক কোমর জলে নেমে ভুটভুটিতে উঠতে হয়। পুরুষদের পাশাপাশি মহিলাদেরকেও এই পরিস্থিতির সম্মুখীন হতে হয়।
আরও পড়ুন: মালদহ মেডিকেলের বহির্বিভাগে লম্বা লাইন কমছে, সৌজন্যে কিউআর কোড
ভুটভুটি বা ভেসেল চড়ায় আটকে গেলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা মাঝ নদীতে বসে থাকতে হয়। এভাবেই প্রতিনিয়ত জীবন হাতে নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে নিত্যযাত্রী থেকে সাগরদ্বীপের বাসিন্দাদের। ঝুঁকি নিয়ে চলছে পারাপার। আর ভেসেল বন্ধ থাকার সুযোগে লাভ ওঠাচ্ছে নৌকার মাঝিরা। যেখানে কাকদ্বীপের লট নম্বর ৮ থেকে গঙ্গাসাগর দ্বীপের কচুবেড়িয়া যাওয়ার জন্য মাথাপিছু ভাড়া ৯ টাকা, নৌকার সেই ভাড়া এই পরিস্থিতিতে বেড়ে হয়ে যাচ্ছে মাথাপিছু ৫০ টাকা! এই অবস্থার জন্য প্রশাসনকেই কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
মুড়িগঙ্গা দিয়ে যাতায়াতের এই সমস্যা নিয়ে শাসক দলের দিকে আঙুল তুলেছেন বিজেপি নেতা অরুণাভ দাস। তিনি বলেন, মুড়িগঙ্গা নদীতে নাব্যতা ফেরানোর জন্য ড্রেজিং বাবদ কোটি কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। কিন্তু সেই টাকা যাচ্ছে কোথায়? যাত্রীদের মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়ে শাসক দলের নেতা-মন্ত্রীরা নিজের পকেট ভরাচ্ছে না তো? দ্বীপ এলাকার মানুষরা ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করছে। কয়েক কিলোমিটার হাঁটার সময় যদি হঠাৎ করে হরকাবান আসে তাহলে বহু লোকের প্রাণ যাবে। মুড়িগঙ্গায় ড্রেজিংয়ের নাম করে কয়েক লক্ষ টাকা হরির লুটের বাতাসার মতো লুট করছে শাসকদলের নেতা-মন্ত্রীরা।
মুড়িগঙ্গার নাব্যতা হারানোর কথা স্বীকার করেছেন সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিমচন্দ্র হাজরা। তিনি জানান, পলি পড়ার কারণে মুড়িগঙ্গা নাব্যতা হারাচ্ছে। তার জেরে ছোট ছোট নৌকা বা ট্রলারে করে মানুষজনকে পারাপার হতে হচ্ছে। সাধারণ মানুষের অসুবিধার বিষয়ে প্রশাসন ইতিমধ্যেই অবগত l গঙ্গাসাগর মেলার কথা মাথায় রেখে কয়েক মাসের মধ্যেই মুড়িগঙ্গার ড্রেজিংয়ের কাজ শুরু করবে রাজ্য সরকার।
সুমন সাহা
নিউজ১৮ বাংলায় সবার আগে পড়ুন ব্রেকিং নিউজ। থাকছে দৈনিক টাটকা খবর, খবরের লাইভ আপডেট। সবচেয়ে ভরসাযোগ্য বাংলা খবর পড়ুন নিউজ১৮ বাংলার ওয়েবসাইটে।
Tags: South 24 Parganas news